কাকতাড়ুয়া উপন্যাস পর্ব-০২ [SSC]
এসএসসি বাংলা-২০২ কাকতাড়ুয়া উপন্যাস সেলিনা হোসেন বহুনির্বাচনি সৃজনশীল ২নং প্রশ্নের উত্তর ২নং প্রশ্ন উদ্দীপক অংশ-১ : বাবা-মাকে কবে হারিয়েছে জানে না শফি। দূরসম্পর্কের কিছু আত্মীয়ও হয়তো আছে বা নেই। তাই তো তার কোনো বন্ধন নেই, নেই কোনো বাধা। মাঠ-ঘাট, বন বাদাড়, হাট-বাজার এই সবই যেন তার। যখন যা পায় তা খেয়েই কাটিয়ে দেয় সারাদিন। উদ্দীপক অংশ-২ : শফির কেউ নেই কিন্তু সে যেন সবার। আজিজ চাচার বাজারের ব্যাগ টানা, সাবিত্রী মাসির ফুল বাগানে একটু পানি দেওয়া, আমেনা চাচির জন্য একটু বাজার করে আনা সবার কাজ যেমন হাসি মুখে করে, সবাই ভালোও বাসে তাকে। ক. ‘কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসে বর্ণিত মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার কে? খ. 'আমরা তিনজন নই, একজন।'- কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপক-২ অংশে শফির মধ্যে 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধা চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক-১ অংশের শফির মধ্যে যে বুধাকে পাই তার স্বরূপ বিশ্লেষণ কর। ক-নং প্রশ্নের উত্তর ● ‘কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসে বর্ণিত মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার হলেন শাহাবুদ্দিন। খ-নং প্রশ্নের উত্তর ● আমরা তিনজন নই, একজন।'- কথাটি দ্বারা ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে বোঝানো হয়েছে। ● বুধাদের গ্রামে পাকিস্তানি সেনারা হানা দিলে প্রায় সবাই গ্রাম ছেড়ে পালায়। আহাদ মুন্সির মতো কিছু লোক শান্তি কমিটিতে নাম লিখিয়ে রাজাকার হয়। কিন্তু সাহসী যুবক আলি, মিঠু, শাহাবুদ্দিন, বুধা গ্রামেই থেকে যায় এবং গোপনে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে। এদের মধ্যে বুধা আত্মভোলা কিশোর। সে মিঠু ও আলিকে বলে তাদের দুজনকে মনে হচ্ছে একজন। বুধার ঐক্যপূর্ণ মনোভাব বুঝতে পেরে তারা বলে দুজন মিলে একজন নই, আমরা তিনজন মিলে একজন। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তিকে বোঝানো হয়েছে। গ-নং প্রশ্নের উত্তর ● উদ্দীপক-২ অংশে 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধা চরিত্রের পরোপকারী ও মানবিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ● পৃথিবীতে একেকজন মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একেক রকম। কেউ অন্যকে উপকার করে আনন্দ পায়, কেউবা অন্যের কাজ এগিয়ে দিয়ে তৃপ্তি পেতে চায়। তাদের মতো নিঃস্বার্থ মানুষের জন্যই সমাজ এখনও বসবাসযোগ্য। উদ্দীপকের শফির কেউ নেই। কিন্তু সে সবার। অন্যের বাজারের ব্যাগ আনা, ফুলের বাগানে পানি দেওয়া, কারও বাজার করা ইত্যাদির মাধ্যমে অপরের মুখে হাসি ফোটাতে চায়। 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধাও এমন পরোপকারী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। বুধাও অন্যের কাজ করে তৃপ্তি পায়। ধান কাটা, গোবর কুড়ানো, বাজার করা, মোট বইয়ে দেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে সে গ্রামের মানুষকে সহযোগিতা করে। নিঃস্বার্থভাবে অন্যের কাজ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বুধা চরিত্রের পরোপকারী দিকটি উদ্দীপকের শফি চরিত্রে প্রকাশ পেয়েছে। ঘ-নং প্রশ্নের উত্তর ● উদ্দীপক-১ অংশের শফির মধ্যে যে বুধাকে পাই তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে সেখানে ঘর-সংসারহীন এক এতিম কিশোরের সন্ধান পাওয়া যায়। ● আমাদের সমাজে এমন অনেকে আছে যাদের আপন বলতে কেউ নেই। যারা সব হারিয়ে উদাসীনতায় নিমজ্জিত হয়েছে। তারা জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে না পেরে ছন্নছাড়ার মতো পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। তাদের কোনো বন্ধন নেই। ● উদ্দীপকের শফির মধ্যে এক ছন্নছাড়া কিশোরের সন্ধান পাওয়া যায়। তার কোনো বন্ধন নেই, কোনো বাধা নেই। মাঠ ঘাটে, বনে-বাদাড়ে সে নির্বিকার ঘুরে বেড়ায়। সমস্ত গ্রামটিই যেন তার আপন। 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধাকেও এমনই জীবনযাপন করতে দেখা যায়। এক রাতের কলেরায় বাবা-মা, ভাই-বোনদের হারিয়ে সে হয়ে পড়ে একা। দারিদ্র্যের কারণে চাচিও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। সে যা পায় তাই খায়। যেখানে ইচ্ছে হয় ঘুমায়। মূলত সে ছন্নছাড়া এক আত্মভোলা কিশোর। ● উদ্দীপকের ১-অংশে শফির মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় তার সঙ্গে বুধার ছন্নছাড়া ও উদাসী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। বুধা 'কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। সে ছেলেবেলায় বাবা-মা, ভাই-বোনদের হারিয়ে ঘর-সংসারহীন এক এতিম। আত্মীয়-পরিজনহীন হয়ে গ্রামময় ঘুরে বেড়ায়। সবার কাজ করে দেয়। কেউ খেতে দিলে খায় নয়তো শুধু পানি খেয়ে যেখানে সুযোগ পায় ঘুমিয়ে পড়ে। তাই বলা যায় যে, শফির মধ্যে যে বুধাকে পাওয়া যায় সে সংসার উদাসী এতিম কিশোর। |
কোন মন্তব্য নেই