বহিপীর নাটক,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,পর্ব-০৩ [SSC]
এসএসসি বাংলা-২০২২ বহিপীর নাটক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বহুনির্বাচনি সৃজনশীল ৩নং প্রশ্নের উত্তর নদীভাঙনে সবকিছু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে আবু তালেব। নিরুপায় হয়ে প্রতিবেশী বিত্তশালী হাবু সর্দারের আমবাগানে একটু আশ্রয় চায়। সুযোগ বুঝে হাবু বলেন, “আশ্রয় তোমাকে। দিতে পারি যদি তোমার কন্যা শিউলিকে আমার বড় ছেলের সাথে বিয়ে দাও।” একথা শুনে হাবুর স্ত্রী করিমন বলেন, “নিজের অসুস্থ বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে একটি মেয়ের জীবন নষ্ট হতে দেব না।" আশ্রয়প্রার্থীর বিপদ বুঝতে পেরে করিমন গোঁপনে যোগাযোগ করে পরিবারটিকে পাশের গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ক. তাহেরা নদীতে কী ভেসে যেতে দেখে? খ. "এমন মেয়েও কারও পেটে জন্মায় জানতাম না" খোদেজা কেন এ কথা বলেছে? গ. উদ্দীপকের হাবু সর্দার 'বহিপীর' নাটকের কোন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের করিমন ও 'বহিপীর' নাটকের হাশেম আলির মানসিকতা একই চেতনাদৃপ্ত"- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ক-নং প্রশ্নের উত্তর ● তাহেরা নদীতে কচুরিপানা ভেসে যেতে দেখে। খ-নং প্রশ্নের উত্তর ● “এমন মেয়েও কারও পেটে জন্মায় জানতাম না" কথাটি দ্বারা তাহেরার আচরণ লক্ষ করে তার মাকে নিন্দা করা হয়েছে। ● তাহেরার সঙ্গে বহিপীরের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু তাহেরা পীরকে স্বামী মানতে নারাজ। সে পীরের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। তার এই পালানোটা জমিদারগিন্নি খোদেজার কাছে খুব অন্যায় কাজ মনে হয়েছে। কারণ খোদেজা পীরভক্ত, পীরের স্ত্রী হওয়া তার কাছে বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। অথচ তাহেরা পীরের বউ হতে রাজি নয়। ঘর থেকে পালানোর কারণে তার প্রতি খারাপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে খোদেজার মনে। এজন্যই তিনি উক্তিটি করেছেন। গ-নং প্রশ্নের উত্তর ● উদ্দীপকের হাবু সর্দার 'বহিপীর' নাটকের বহিপীর চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ● বাঙালি মুসলমান সমাজে পীরদের বিশেষ সম্মানের চোখে দেখা হয়। কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের মধ্যে অন্ধ পীরভক্তিও লক্ষ করা যায়। বেশিরভাগ পীরই মানুষের ধর্মানুভূতি ও বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে, যা মানবকল্যাণের অন্তরায় ও অমানবিক। ● উদ্দীপকে নিরুপায় এক ব্যক্তিকে শর্ত সাপেক্ষে সাহায্য করার মাধ্যমে হীনস্বার্থ হাসিলের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে নদী ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে আবু তালেব বিত্তশালী প্রতিবেশী হাবু সর্দারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। তখন হাবু সর্দার সুযোগ বুঝে তার অসুস্থ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলের সঙ্গে আবু তালেবের মেয়ের বিয়ে দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেয়। উদ্দীপকের এই বিষয়টি 'বহিপীর' নাটকে হাতেম আলির জমিদারি রক্ষার টাকা দিয়ে বিনিময়ে তাহেরাকে বহিপীরের হাতে তুলে দেওয়ার শর্তের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা। বহিপীরও সেখানে সুযোগ বুঝে নিজের হীনস্বার্থ উদ্ধারের প্রস্তাব দিয়েছে। তারা উভয়ই হীন স্বভাব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ঘ-নং প্রশ্নের উত্তর ● "উদ্দীপকের করিমন ও ‘বহিপীর' নাটকের হাশেম আলির মানসিকতা একই চেতনাদৃপ্ত"- মন্তব্যটি যথার্থ। ● সমাজের কিছু মানুষ আছে যারা অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির। তারা সুযোগসন্ধানী। মানুষের বিপদের সময় সাহায্য না করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর হয়ে ওঠে। আত্মসচেতনরা সহজে তা বুঝতে পারে এবং তাদের ফাঁদ এড়িয়ে নিজেদের রক্ষা করে। ● উদ্দীপকের করিমন অসহায় আবু তালেবের কন্যা শিউলির আসন্ন ক্ষতির দিক বিবেচনা করে। তার পরিবারকে পাশের গ্রামে তার বাপের বাড়িতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। এই দিকটি ‘বহিপীর' নাটকে বহিপীরের হাত তেকে তাহেরাকে মুক্ত রাখার জন্য হাশেম আলির কর্মতৎপরতার দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। পিতার জমিদারি রক্ষার টাকা পরিশোধ করে বহিপীর তাহেরাকে নিজের কাছে নেওয়ার যে শর্তের ফাঁদ পেতে ছিল তাতে তাহেরা রাজি হয়েছিল তার আশ্রয়দাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে। তাই হাশেম তাদেরকে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে বহিপীরের হাত থেকে রক্ষা করেছে। উদ্দীপকের করিমনও তার স্বামীর অভিপ্রায় বুঝতে পেরে শিউলিকে নিরাপদে পাঠিয়ে দিয়েছে। ● 'বহিপীর' নাটকে হাশেম আলি ইতিবাচক চরিত্র। তার কাছে মানবীয় মূল্যবোধ ও ন্যায়বোধের গুরুত্ব সর্বাধিক। এ কারণে সে তাহেরার পক্ষ নিয়ে মায়ের সঙ্গে যুক্তি দেখিয়ে কথা বলেছে এবং বহিপীরের হীন সার্থপরতার প্রতিবাদ করেছে। উদ্দীপকের করিমনও ইতিবাচক চরিত্রের মানুষ। তিনিও ন্যায়বোধে উন্নীত। তাই নিজের প্রতিবন্ধী ছেলের সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থী আবু তালেবের কন্যাকে বিয়ে দিতে রাজি হননি। তিনি তাই মেয়েটিকে হাবু সর্দারের শর্তের বাইরে নিয়ে গেছেন। এভাবে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ হয়ে উঠেছে। |
কোন মন্তব্য নেই