শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব মোতাহের হোসেন চৌধুরী,পর্ব-০২ SSC
এসএসসি বাংলা-২০২২ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব মোতাহের হোসেন চৌধুরী বহুনির্বাচনি সৃজনশীল ২নং প্রশ্নের উত্তর ২নং প্রশ্ন রফিক সাহেব ও মিসেস ইয়াসমিন একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। রফিক সাহেব একটি অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। তিনি বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তাই তিনি তার বেতনের বাইরে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অনৈতকিভাবে টাকা-পয়সা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে মিসেস ইয়াসমিন শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। তিনি শ্রেণিতে পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীদের তিনি পাঠ্যবই ছাড়াও বিভিন্ন বই-পুস্তক পড়ে নিজের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য উৎসাহিত করেন। ক. লোভের ফলে কিসের মৃত্যু ঘটে? খ. লেখক শিক্ষাকে 'মই' হিসেবে দেখেছেন কেন? গ. উদ্দীপকের রফিক সাহেবের চরিত্রে 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে বর্ণিত শিক্ষার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. মিসেস ইয়াসমিন শিক্ষার আসল উদ্দেশ্যকে ধারণ করতে পেরেছেন। " “শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ক-নং প্রশ্নের উত্তর ● লোভের ফলে মানুষের আত্মার মৃত্যু ঘটে । খ-নং প্রশ্নের উত্তর ● জীবসত্তা থেকে মানবসত্তার ঘুরে উত্তরণের মাধ্যম বিবেচনা করে শিক্ষাকে লেখক মই হিসেবে দেখেছেন। ● 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনকে একটি দোতলা ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জীবসত্তা হচ্ছে সেই ঘরের নিচতলা আর মানবসত্তা হচ্ছে তার উপরের তলা। মানুষের জন্য এই সত্তারই প্রয়োজন রয়েছে। মানবজীবনকে এই জীবসত্তা থেকে মানবসত্তায় উত্তীর্ণ করার মাধ্যম হিসেবে লেখক শিক্ষার কথা বলেছেন। তার মতে জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তার ঘরে উঠবার মই হচ্ছে শিক্ষা। গ-নং প্রশ্নের উত্তর ● উদ্দীপকের রফিক সাহেবের চরিত্রে 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে বর্ণিত শিক্ষার প্রয়োজনের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। ● মূল্যবোধের সঠিক বিকাশ ঘটাতে হলে অবশ্যই সুশিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। জীবনে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেতে প্রকৃত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখতেই মানুষ অধিক মনোযোগী। ফলে অর্থচিন্তা সারাক্ষণ মানুষকে ব্যস্ত রাখে। অর্থচিন্তায় ব্যস্ত মানুষ প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারে না। ● উদ্দীপকের রফিক সাহেব পড়াশোনার শেষে চাকরিতে যোগ দেন। অথচ তিনি শিক্ষার সুফল পাননি। কারণ অর্থচিন্তার নিগড় থেকে তিনি বের হতে পারেননি। তাই অসৎ পথে অর্থ উপার্জন করে ধনবান হতে চেয়েছেন। 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে লেখক শিক্ষার দুটি দিকের কথা বলেছেন। একটি প্রয়োজনের দিক, অন্যটি অপ্রয়োজনের দিক। আর এই অপ্রয়োজনের দিকটিই শ্রেষ্ঠ। কেননা শিক্ষার এই দিকটি শেখায় জীবনকে উপভোগ করে মনুষ্যত্বের অধিকারী হতে। উদ্দীপকের রফিক সাহেব এ দিকটির দেখা পাননি। তার মধ্যে শিক্ষার প্রয়োজনীয় তথ্য ক্ষুৎপিপাসা পূরণের দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে। ঘ-নং প্রশ্নের উত্তর ● “উদ্দীপকের মিসেস ইয়াসমিন শিক্ষার আসল উদ্দেশ্যকে ধারণ করতে পেয়েছেন।” – “শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ ও যুক্তিযুক্ত। ● শিক্ষার দুটি দিক রয়েছে। একটি প্রয়োজনের, অন্যটি অপ্রয়োজনের। এর মধ্যে অপ্রয়োজনের দিকটিই শ্রেষ্ঠ। কারণ এ দিকটি শেখায় মনুষ্যত্বের অধিকারী হতে, অর্থচিন্তার নিগড় থেকে মানুষকে মুক্ত করতে। এদিকটিই শিক্ষার প্রকৃত দিক। ● উদ্দীপকের মিসেস ইয়াসমিন শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকের সঙ্গে জড়িত। তার মধ্যে জীবসত্তার দিকটি প্রকট হয়ে ওঠেনি। তিনি মানবসত্তার বিকশিত মানুষ। তিনি অর্থসাধনাকে জীবনসাধনা মনে করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষা দান করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তার মধ্যে শিক্ষা সোনা ফলাতে পেরেছে। শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে লেখক এটাই প্রত্যাশা করেছেন, এখানে একথাই বলা হয়েছে। শিক্ষার আসল কাজ মূল্যবোধ সৃষ্টি। মিসেস ইয়াসমিনের মধ্যে তা পরিলক্ষিত হয়েছে। ● 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে লেখক বলেছেন— জীবসত্তার প্রয়োজন অন্ন-বস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি এবং শিক্ষা লাভের মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো। অন্যদিকে উদ্দীপকের মিসেস ইয়াসমিনের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটেছে। তিনি শিক্ষার্থীকে মনুষ্যত্বের স্বাদ পাওয়ার পথ তৈরি করতে নৈতিক শিক্ষা দান করেছেন। এদিক থেকে বলা যায়, তিনি শিক্ষার আসল উদ্দেশ্যকে ধারণ করতে পেরেছেন। |
কোন মন্তব্য নেই