কাকতাড়ুয়া উপন্যাস সেলিনা হোসেন পর্ব-০৩ [SSC]
এসএসসি বাংলা-২০২ কাকতাড়ুয়া উপন্যাস সেলিনা হোসেন বহুনির্বাচনি সৃজনশীল ৩নং প্রশ্নের উত্তর ৩নং প্রশ্ন শাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে-পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। ক. 'এইসব প্রজাপতি তোর জন্য'- উক্তিটি কে করেছিল? খ. দুঃখকে বুধা হিংস্র শকুন ভাবে কেন? ব্যাখ্যা কর। গ. 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের কোন চিত্র উদ্দীপকটির মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের বাংলাদেশ 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের পুড়ে যাওয়া বাজারের প্রতিরূপ- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ক-নং প্রশ্নের উত্তর ● 'এইসব প্রজাপতি তোর জন্য— উক্তিটি করেছিল ফুলকলি। খ-নং প্রশ্নের উত্তর ● দুঃখকে বুধা হিংস্র শকুন বলে বিবেচনা করে কারণ দুঃখ শকুনের মতোই ধীরে ধীরে মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়। ● হঠাৎ মা-বাবা, ভাই-বোন সবাইকে হারিয়ে বুধা প্রচণ্ড দুঃখ পায়। তার দুঃখ দিন দিন বেড়েই চলে। স্নেহ-মমতাহীন হয়ে বুধার স্বাভাবিক জীবন অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। শকুন মৃত জন্তুকে যেমন ঠুকরে ঠুকরে নিঃশেষ করে দেয়, ঠিক তেমনি দুঃখও বুধার জীবনকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দিয়েছে। তাই বুধা দুঃখকে হিংস্র শকুনের সাথে তুলনা করেছে। খ-নং প্রশ্নের উত্তর ● 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের হানাদারদের অত্যাচার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার চিত্র উদ্দীপকটির মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। ● মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ কাউকেই রেহাই দেয়নি। বর্বর হানাদাররা সবাইকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের এই হত্যাযজ্ঞ বাঙালিকে দমাতে পারেনি। ● উদ্দীপকে অত্যাচারিত বাংলার মানুষের সাহসিকতার দিকটি উঠে এসেছে। বাঙালি এতটাই সাহসী জাতি যে, জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার হয়ে গেলেও তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ায় না। বাঙালির সাহসিকতার এ প্রসঙ্গটি 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানে পাকিস্তানি সেনারা জিপে করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে গ্রামে প্রবেশ করে নিরীহ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করে। গ্রামের বাজারে, মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়। তবু তারা এদেশের মানুষকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। দেশপ্রেমিক মানুষ সংগঠিত হয়ে শত্রুর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কিশোর বুধার রাজাকার কমান্ডারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং বাঙ্কারে মাইন পুঁতে মিলিটারি ক্যাম্প উড়িয়ে দেওয়ার চিত্রটি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। গ-নং প্রশ্নের উত্তর ● উদ্দীপকের বাংলাদেশ 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের পুড়ে যাওয়া বাজারের প্রতিরূপ- মন্তব্যটি নিচে বিশ্লেষণ করা হলো। ● স্বদেশের প্রতি বাঙালির ভালোবাসা অকৃত্রিম। তাই স্বদেশের ওপর কোনো আঘাত, দেশের মানুষের ওপর কোনো অত্যাচার নির্যাতন তারা মেনে নিতে পারেনি। স্বদেশকে রক্ষা করার জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলে। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করে তাদের স্বপ্নের স্বাধীনতা। • উদ্দীপকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ছারখার করা বাংলাদেশের ছিন্নভিন্ন রূপটি অঙ্কিত হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, বাঙালি জাতি আত্মত্যাগের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা দেখে বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। শত্রুরা বাঙালিদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে, তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু বাঙালির ঐক্যবন্ধ ও সাহসী চেতনার কাছে শত্রুরা শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়ে পালিয়ে বেঁচেছে। পাকিস্তানি হানাদারদের হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের যে প্রেক্ষাপট উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচ্য উপন্যাসের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সেখানেও বর্বর হানাদার বাহিনী কর্তৃক ঘরবাড়ি পোড়ানোর বর্ণনা আছে। ● ‘কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসে বুধাদের গ্রামে পাকিস্তানি সেনারা প্রবেশ করার পর নানা অত্যাচার ও বর্বরতা শুরু করে। গ্রামের ঘরবাড়ি, হাট-বাজার সব পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। উদ্দীপকের বাংলাদেশকে এই পুড়ে যাওয়া বাজারের প্রতিরূপ বলা যায়। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ। |
কোন মন্তব্য নেই